হাই হিলে রক্তাক্ত পা, নতুন বিতর্কের সৃষ্টি

প্রকাশঃ মে ১২, ২০১৬ সময়ঃ ৫:৫৩ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:৫৩ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ

shoes

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন নারী তার রক্তাক্ত পায়ের ছবি পোস্ট করেছেন। এই নারীর পা রক্তাক্ত হয় হাই হিল পড়ে রেস্টুরেন্টের ওয়েট্রেস হিসেবে ফুল শিফট কাজ করার ফলে। রক্তাক্ত পায়ের এই ছবিটি এক সপ্তাহের মধ্যে ১১,৫০০ বার শেয়ার করা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে নারীর বাধ্যতামূলক হাই হিল পড়ার বিষয়টিও জোরেসোরে আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনার ইস্যু হয়ে উঠেছে এর ফলে।

ফেসবুকের একটি পোস্টে নিকোলা গ্যাভিন নামের ঐ ওয়েট্রেস নারী কর্মীদের অন্তত এক ইঞ্চি উচ্চতার হিল পড়তে বাধ্য করার জন্য কানাডার এডমন্টনে অবস্থিত জোয়ি রেস্টুরেন্টের সমালোচনা করেন।

তিনি পোস্টে লেখেন, এক শিফটে কাজ করার পর তার এক বন্ধুর পায়ের নখ ভেঙ্গে যায়। কিন্তু তার সুপারভাইজারের নির্দেশ পরের দিনও তাকে হাই হিল পড়তে হবে।

নিকোলা গ্যাভিন আরো জানান, নারী কর্মীদের একটি নির্দিষ্ট কালো ইউনিফর্ম কিনতে ৩০ ডলার দিতে হয় রেস্টুরেন্টটিকে, যেখানে পুরুষ কর্মীরা নিজেদের ইচ্ছেমতো কালো পোশাক বাছাই করতে পারেন।

নিকোলা গ্যাভিন লিখেছেন, “এই সার্ভিস ইন্ড্রাস্ট্রিতে আমার অনেক বন্ধু আছে এবং আমি এমন অনেক নারীকে চিনি যারা খাবার পরিবেশনের সময় নিজেদের স্বস্তি বিসর্জন না দিয়েও অনেক বকশিস পান।” তিনি লেখেন, “আমি এই ব্যবস্থার সমর্থন অব্যাহত রাখাকে পছন্দ করবো।”

ফ্রিল্যান্স মেকআপ আর্টিস্ট নিকোলা গ্যাভিন পরবর্তীতে তার পোস্ট আপডেট করেন অবৈতনিক ট্রেনিং শিফটের ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়ে।

এক ব্যক্তি নিকোলার পোস্টে কমেন্ট করেন, “এটা সম্পূর্ণরূপে বিরক্তিকর এবং নারীর জন্য বৈষম্যমূলক যে নারীকে হাই হিল পড়তে জোর করা হয়। এটা আপনার পায়ের জন্য, মেরুদন্ডের জন্য, হাড় ও মাংসপেশী সংযোগকারী তন্তুর জন্য এবং কাফ মাসলের জন্য ক্ষতিকর। ”

যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডাভিত্তিক চেইন রেস্টুরেন্ট জোয়ি এক বিবৃতি জানিয়েছে, নিকোলা গ্যাভিনের এই পোস্টটি দেখে তারা ‘আপসেট’ এবং তারা তাদের কর্মীদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছে এবং প্রত্যুত্তর জেনেছে।

“আমাদের জুতা পরিধানের নিয়মে কোন ‘মিনিমাম’ উচ্চতা বলে কিছু নেই। ফ্ল্যাট জুতা, ফ্ল্যাট হিল এবং হিল সবই পড়া যায়। যেসব নারী কর্মী হিল পড়েন, আমরা নিশ্চিত করি সেই হিলের উচ্চতা যাতে কোনভাবেই আড়াই ইঞ্চির বেশি না হয়।” বলেছে জোয়ি রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, যে মাসে লন্ডনের অস্থায়ী কর্মী নিকোলা থর্পকে হিসাববিদ্যার ফার্ম পিডব্লিউসি থেকে চাকরির প্রথম দিনই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাই হিল না পড়ার অপরাধে, ঠিক সে মাসেই নিকোলা গ্যাভিনের এই পোস্টটি অনলাইনে ভাইরাল হয়ে যায়।

“আমাকে বলা হয়েছিল ৯ ঘন্টার ডিউটি করতে, যেখানে আমার কাজ ছিল ক্লায়েন্টদের মিটিং রুম পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া। আমি বলেছিলাম, হাই হিল পড়ে এ কাজ করা আমার পক্ষে সম্ভব না।” বিবিসিকে জানান নিকোলা থর্প।

কোম্পানিগুলোর কর্মক্ষেত্রে নারী কর্মীদের বাধ্যতামূলকভাবে হাই হিল পড়ানোর বিরুদ্ধে নিকোলা থর্পের পিটিশনে ৮৩ হাজার মানুষ সাক্ষর করেছে।

গত বছরই জুতা বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, যখন নারীরা প্রশ্ন করেন কেন তাদেরকে কান ফিল্ম ফেস্টিভালের রেড কার্পেট থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো কেবল হাই হিল না পড়ার কারণে। যাদেরকে গত বছর কান ফিল্ম ফেস্টিভালের রেড কার্পেটে হাঁটতে দেওয়া হয়নি তাদের মধ্যে চিত্র প্রযোজক ভ্যালেরিয়া রিখটারও ছিলেন, যার বাম পায়ের কিছু অংশ শল্যচিকিৎসার মাধ্যমে কেটে ফেলতে হয়েছে।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G